নাচোল(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল বেগম মহসিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইশাহাক আলীর বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকরি, প্রতিষ্ঠানের জমি কমমুল্যে বিক্রি, জাল সনদে মাদ্রাসায় আরো ৩জনের নিয়োগসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেলেও বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন এ অধ্যক্ষ। একই শিক্ষা বর্ষে বাংলাদেশ-ভারতের সনদ-পত্র দাখিল করে চাকরি করলেও নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা। অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় ওই মাদ্রাসায় জাল সাটিফিকেটে চাকরী করছেন আরো তিন জন সহকারী শিক্ষক। ইশাহাক আলী উপজেলার ঘিওন জোনাকী পাড়া গ্রামের মৃত মন্জুর হোসেনের ছেলে এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নাচোল ইউনিয়নের সাবেক আমীর। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইশাহাক আলী।
তথ্যসুত্রে জানাগেছে, নাচোল বিএম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইশাহাক আলী’র সহকারী সুপার পদে প্রথমে যোগদান করেও তার সহকারী শিক্ষক মৌলভী পদে বেতন ভাতা হয়। যোগদানের সময় তিনি বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে ভারত থেকে পাশকৃত কামিল পাশের সনদ দাখিল করেছেন মাদ্রাসায়। জানা যায়, আলিম ২য় বিভিগ /১৯৭৯,ফাজিল ৩য় বিভাগ/১৯৮১,কামিল ৩য় শ্রেনী ১৯৮৩। কামিল ২য় শ্রেণী ১৯৮৪ (ভারত)বিএ অনার্স ২য় শ্রেনী ১৯৮৫ (অনুষ্ঠিত-১৯৮৭) এম এ ২য় শ্রেনী /১৯৮৬ (অনুষ্ঠিত ১৯৮৯) এ সনদ গুলি তিনি মাদ্রাসায় দাখিল করেছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ০৩/৮/১৯৮৭ সালে ইশাহাক আলী সহকারী সুপার পদে চাকুরী করার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র ছিলেন এবং ১৯৮৪ সালেও ভারত থেকে কামিল পাশের সময়ও সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র ছিলেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিংবা বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি না নিয়ে বহিরাগত পরীক্ষার্থী হিসেবে ভারতের কামিল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছেন বলে এক তদন্ত রির্পোটে উল্লেখ রয়েছে। রির্পোটে আরো জানা জায় যে, ভারত থেকে পাশকৃত কামিল পরীক্ষার সনদে কেন্দ্রের নাম, রোল নম্বর এবং রেজিষ্ট্রেশন নম্বরও নেই। এছাড়া সহকারী সুপার থেকে কিভাবে অধ্যক্ষ পদ পেলেন এর নেই কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেই সাক্ষাৎকার পত্র, নেই নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের কার্য বিবরনী। তবে এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ইশাহাক আলী বলেন, পদন্নতি পেয়েই তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান।
এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষের অনুমতি না নিয়ে মাদ্রাসার কোটি টাকার মুল্যের ০.২৭ এরক জমি কম মুল্যে বিক্রয় করেছেন। এছাড়া পুর্বের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে উচ্চ বেতন স্কেলে বেতন ভাতা ভোগ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এছাড়া ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপস্থিত থাকলেও বেশির ভাগ সময়ে তিনি সহ-সভাপতিকে দিয়ে সভা পরিচালনাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ ইশাহাকের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষ ইশাহাকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তৎকালীন বেগম মহসিন ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি ফরিদ উদ্দিন অস্থায়ীভাবে বরখাস্ত করলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন অধ্যক্ষ ইশাহাক আলী। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ, ফ, ম হাসান এর সাথে গতকাল শনিবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,্ আমি নাচোলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে সম্প্রতি যোগদান করেছি এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানানেই তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ-বিষয়ে অধ্যক্ষ ইশাহাক আলীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অনিয়মের বিষয়টি মিথ্যে ও কাল্পনিক বলে এ প্রতিবেদককে অবহিত করেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লোকমুখে সার্টিফিকেট জালের বিষয়টি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের বিরুদ্ধে শুনেছি, তবে নতুন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার যে হেতু যোগদান করেছেন সেটি তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে অবহিত করেনএ প্রতিবেদক কে।